বদরুদ্দীন উমরের জন্মদিনে সোসাল মিডিয়াতে শিল্পজনের শুভেচ্ছা বার্তা 2021

বদরুদ্দীন

বদরুদ্দীন উমরের জন্মদিনে সোসাল মিডিয়াতে শিল্পজনের শুভেচ্ছা বার্তা

Pradip Dutta

সবগুলো জাতীয় পুরস্কার তাকে দেয়া হয়েছিল এবং সবগুলোই তিনি সবিনয়ে প্রত্যাখান করেছেন। শুভ জন্মদিন বদরুদ্দীন ওমর কৈশোরে যার বই হাতে নিলে হৃদয়স্পদন বেড়ে যেত।

বাংলাদেশের শিক্ষা, গবেষণা ও রাজনীতির অন্যতম দিকপাল বদরুদ্দীন উমরের আজ ৯১তম জন্মদিন। ১৯৩১ সালের এই দিনে তিনি বর্ধমানে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বাবা আবুল হাশিম এ অঞ্চলে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন, অখণ্ড বাংলার পক্ষে কাজ করেছেন, মুসলিম লীগের প্রগতিশীল অংশের নেতা হিসেবে তাঁর খ্যাতি ছিল। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পের মধ্যে ১৯৫০ সালে তাঁরা সপরিবারে ঢাকায় চলে আসেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে উমর সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। পরে এই আন্দোলনের গবেষণায় তিনি পথিকৃৎ হিসেবে বিবেচিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষে উমর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান, দর্শন ও অর্থশাস্ত্রে ডিগ্রি অর্জন করেন। দেশে ফিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন, পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজতত্ত্ব বিভাগ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

ষাটের দশকে বদরুদ্দীন উমর সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে যে লেখাগুলো লিখেছিলেন, তা ‘বাঙালি মুসলমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের’ পথ দেখিয়েছিল। সে সময় বাঙালি মুসলমান মধ্যবিত্ত সমাজকে শিক্ষিত ও আত্মোপলব্ধিতে সক্ষম করে তুলতে, পাকিস্তানের শাসক শ্রেণির বিরুদ্ধে তাদের ভূমিকা নির্দিষ্ট করতে উমরের এই কাজগুলোর প্রভাব ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ। ষাটের দশকের শেষ থেকে তিনি ভাষা আন্দোলন নিয়ে দীর্ঘ গবেষণার কাজ শুরু করেন। কোনো রকম প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা ছাড়াই তিনি ‘পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ নামের বৃহৎ গবেষণা সমাপ্ত করেন।

তিন খণ্ডে এটি প্রকাশিত হয়। আহমদ ছফা বলেছিলেন, ‘আর কিছু দরকার নেই, উমর যদি জীবনে আর কিছু না–ও করতেন, তবু এই গ্রন্থের জন্যই তিনি বাঙালি সমাজে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’ সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত অনুসন্ধানে তাঁর গবেষণা ও লেখার পদ্ধতি অসাধারণ। এরপরও তিনি আরও অনেক কাজ করেছেন, এখনো একই রকম সক্রিয়তায় করে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে তাঁর শতাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।

শুধু লেখক, গবেষক ও শিক্ষক হিসেবে উমরের যে অবদান, তার তুলনাই খুঁজে পাওয়া কঠিন। কিন্তু তিনি এর মধ্যেই নিজেকে সীমিত রাখতে পারেননি। বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মধ্য দিয়ে তাত্ত্বিক হিসেবে তাঁর যে বিপ্লবী অবস্থান তৈরি হয়, তার পূর্ণতার জন্যই তিনি সমাজের বিপ্লবী রূপান্তরের রাজনৈতিক, সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। ষাটের দশকে সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে লিখতে গিয়ে আইয়ুব-মোনেম সরকারের রোষানলে পড়ে তিনি এতটুকু উপলব্ধি করেন যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত থেকে তাঁর পক্ষে বেশি দূর কাজ করা সম্ভব নয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত হন।

পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় রক্তচক্ষু থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করার জন্যই তিনি শিক্ষকতা ছেড়েছিলেন। তাঁর সম্পাদিত পত্রিকা সংস্কৃতি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৭৪ সালে। সেই পত্রিকার নিয়মিত প্রধান লেখক ছিলেন বদরুদ্দীন উমর ও সইফ-উদ-দাহার। অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ লেখা সে সময় তাতে প্রকাশিত হচ্ছিল। কয়েক সংখ্যা প্রকাশের পরই জরুরি অবস্থার কারণে সংস্কৃতি বন্ধ হয়ে যায় ১৯৭৪ সালের ডিসেম্বর মাসে। ১৯৮১ সালে সংস্কৃতি আবার প্রকাশ শুরু হয়। মাঝখানে অনিয়মিত হয়ে গেলেও এখনো তা প্রকাশিত হচ্ছে।

 আমাদের সমাজে বুদ্ধিবৃত্তি যেন বাণিজ্যের মধ্যে বসতি গেড়েছে। বাজার, সুশীল সমাজ বা এনজিও জগৎ—এই হলো এ ধরনের বুদ্ধিবৃত্তিক কাজের শুরু ও শেষ। এ ধরনের লোকের কাছে বুদ্ধিবৃত্তি তাই ফরমায়েশি বা তোষণমূলক বা অর্থ উপার্জনের মাধ্যম। সুবিধাবাদিতা, লেজুড়বৃত্তি কিংবা দেউলিয়াত্ব প্রগতি চিন্তা ও রাজনীতির প্রবল শক্তিকে এখনো আটকে রেখেছে। বদরুদ্দীন উমরের মতো ব্যক্তি এ রকম সমাজে অস্বস্তির কারণ হওয়ারই কথা। বাংলা ভাষায় মার্ক্সবাদী সাহিত্য উপস্থিত করায় উমর অগ্রণী, ইংরেজিতে পূর্ব পাকিস্তানের শ্রেণি সংগ্রাম ও বাংলাদেশের অভ্যুদয়সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যা লিখেছেন, তা বাংলাদেশের সমাজ ইতিহাস নিয়ে ইংরেজি ভাষার আগ্রহী পাঠক-গবেষকদের অনেক ভ্রান্তি দূর করবে নিশ্চিতভাবেই। বাংলাদেশে শোষণ, নিপীড়ন, বৈষম্য ও সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্য নিয়ে উমরের ক্ষুরধার লেখা সমাজে অধিপতি চিন্তাকে বিরতিহীনভাবে মোকাবিলা করে যাচ্ছে।

সততা, নিষ্ঠা, আপসহীনতা, দৃঢ়তা—এসব শব্দই উমরের পরিচয়ে নির্দ্বিধায় যোগ করা যায়। উমরের জীবনে বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ ও মানুষের মুক্তির রাজনীতির মধ্যে কোনো প্রাচীর নেই, একে অপরের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য। ষাটের দশকের শেষ থেকে উমর সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছেন। কৃষক-শ্রমিকদের সঙ্গেও অনেক কাজ করেছেন। এ দেশে বিপ্লবী আন্দোলন সংগঠন বিস্তারে ব্যর্থতা তো বিরাট, নইলে বাংলাদেশের চেহারা ভিন্ন হতো। ব্যর্থতা না থাকলে ১৬ কোটি মানুষ নিজেদের মানুষ হিসেবে আবিষ্কার করত, মানুষ ও প্রকৃতি মিলে এক অসাধারণ জীবন আমরা প্রত্যক্ষ করতে পারতাম। তবে সেই ব্যর্থতা সামষ্টিক, সবারই তাতে দায় আছে।

কিন্তু উমর যেখানে সফল, সেটা হলো তিনি হার মানেননি। বাংলাদেশে এখন বিভিন্ন পর্যায়ে মানুষের যে লড়াই, তা উমরের ভাষায়, ‘৭১-এর অসমাপ্ত মুক্তিসংগ্রামের জের।’ পরাজয়, আত্মসমর্পণ আর দাসত্বের শৃঙ্খল প্রত্যাখ্যান করার শক্তিই এই সংগ্রাম এগিয়ে নেওয়ার পূর্বশর্ত। জীবনের এই পর্যায়ে এসে উমর গভীর তৃপ্তি আর প্রবল অহংকার নিয়ে বলতে পারেন, তিনি আজীবন বিরামহীনভাবে এই শক্তি নিয়েই কাজ করেছেন। তিনি তাঁর যথাসাধ্য ভূমিকা পালনে কিছুমাত্র দ্বিধা বা ক্লান্তি প্রদর্শন করেননি। ৮৪তম জন্মদিনে আজীবন শিক্ষক ও যোদ্ধা বদরুদ্দীন উমরকে গভীর শ্রদ্ধা জানাই।

 

 Zakir Talukder 

আমাদের দেশের সিংহভাগ বুদ্ধিজীবী-লেখক-কবিরা অপছন্দ করেন বদরুদ্দীন উমরকে।  অনেক কারণ আছে। তাঁর অনমনীয়তা, আদর্শে অবিচল থাকার জন্য প্রয়োজনে একা হয়ে যাওয়াকে ভয় না করা– এসব যেহেতু নিজেরা পারেন না, সেই হীনম্মন্যতা থেকেই তৈরি হয় মানসিক বিরূপতা। তাত্ত্বিক বা গুরুগম্ভীর আলোচনা বাদ থাকুক এখানে। একটি মোটাদাগের পার্থক্য তুলে ধরা যাক।

আমরা যখন পুরস্কার কুড়াতে ব্যস্ত, তিনি তখন প্রত্যাখ্যানের একের পর এক নজির গড়ে গেছেন।

১. রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার চাকুরি ত্যাগ।

২. আদমজী পুরস্কার— প্রত্যাখ্যান

৩. ফিলিপস পুরস্কার— প্রত্যাখ্যান

৪. বাংলা একাডেমি পুরস্কার— প্রত্যাখ্যান

৫. ইতিহাস পরিষদ পুরস্কার— প্রত্যাখ্যান

৬. একুশে পদক— প্রত্যাখ্যান

এগুলো সবই নব্বই দশকের ঘটনা। এরপরে আর কেউ তাঁকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার সাহসই পাননি। এই ভিখিরিপনায় আক্রান্ত, মেরুদণ্ডহীন দেশে বদরুদ্দীন উমর বড় বেমানান একজন। লাল সালাম কমরেড বলার যোগ্যতা আমার নেই। আমি বলি, সালাম। শুভেচ্ছা।

 

Muhammad Rouf 

বদরুদ্দীন উমর। একটি ইতিহাসের নাম। ১৯৩১ খিস্টাব্দে ২০ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভূভারতের বর্ধমান শহরে জন্মেছিলেন। পিতা আবুল হাশিম যুক্ত বাংলার পক্ষে ছিলেন। দাদা আবুল হায়াত তিরিশ ও চল্লিশের দশকে কংগ্রেস রাজনীতির সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন। পূর্বপুরুষের প্রগতিশীল চিন্তাচেতনা ও মার্কসীয় চিন্তাভাবনার সঙ্গে সমন্বয়পূর্বক তার জীবনপরিসর গড়ে ৷ অকসফোর্ডসহ দেশবিদেশের নানা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠগ্রহণ শেষে শিক্ষকতাকে ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন তিনি। তার হাতেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান (১৯৬৩) ও সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ। কিন্তু পাকিস্তানি সামরিক সরকারের চাপে অধ্যাপনা ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি (১৯৬৮)। যোগ দিয়েছিলেন পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টিতে। একটি মহৎ উদ্দেশ্য নিয়েই তিনি ক্ষমতার বিপরীত প্রান্তে প্রান্তজনগোষ্ঠীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন।

আন্দোলন সংগ্রাম করে জীবনটা কাটিয়ে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু ফসল ঘরে তুলতে পারেননি। পিতার ন্যায় উমরও অনেকটা সাম্রাজ্যবাদী বুর্জোয়া শক্তির কাছে পরাজিত হয়েছেন। আহমদ ছফার বিবেচনায়, মামুলি জয়ের চেয়ে বৃহৎ পরাজয় ভালো। উমরের ক্ষেত্রে বিষয়টি অনেকটা তেমনি। দলদাস, দলবাজ, তোষামুদেরা আগাছার মতো তরতর করে বেড়ে ওঠে। কিন্তু উমর বেড়ে উঠেছিলেন একটু একটু করে, সংগ্রাম ও সাধনার মধ্য দিয়ে। কেবল রাজনীতি নয়, লেখালেখিতেও তিনি অনন্য।

সাম্প্রদায়িকতা, সংস্কৃতির সংকট, সাংস্কৃতিক সাম্প্রদায়িকতা, পূর্ব বাংলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতিসহ প্রচুর গ্রন্থ রচনা করেছেন তিনি। ২০ ডিসেম্বর বদরুদ্দীন উমরের ৯১তম জন্মদিন। বদরুদ্দীন উমরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে অনেকেই শতায়ু কামনা করেছেন। আমিও করি। হৃদয়ের গভীর থেকে কামনা করি, শতায়ু হোন তিনি। শুভ জন্মদিন প্রিয় প্রান্তসখা।

Ma Sayeed

আমার ভাবনা:- ১৩২

আজ আমার অন্যতম প্রিয় বিপ্লবী লেখক,গবেষক ও প্রাবন্ধিক জনাব,বদরুদ্দীন ওমরের  জন্মদিন।

শুভ জন্মদিনে লেখককে জানাই বিপ্লবী অভিনন্দন, রক্তিম শুভেচ্ছা, ও লাল সালাম।

১৯৩১ সালের এই দিনে তিনি পশ্চিম বঙ্গের বর্ধমানে জন্মগ্রহন করেন। বাবার নাম আবুল হাসিম তিনি মুসলিম লীগ প্রগতিশীল অংশের সাথে যুক্ত ছিলেন। আমি যখন তাঁর (বদরুদ্দীন ওমর) মুক্তি কাউন্সিলের সাথে যুক্ত ছিলাম তখন বার কয়েক দেখা ও কথা হয়েছিল প্রতি বারই শ্রেণীহীন শোষন মুক্ত সমাজ বিনির্মানের প্রত্যয় ব্যাক্ত করতেন, তাঁর বিপ্লবী চেতনার দৃঢ়তা দেখে শরীরে শিহরণ জাগত।

এখন অবশ্য আমার জীবন থেকে সে সমস্ত অতীত, কিন্তু তাঁর ক্ষুরধার লিখনীতে এখনো আমি শানিত হই। তাঁর প্রতিটা লেখা এখনো আমি মনোযোগ সহকারে পড়ি বিশেষ করে যুগান্তরে প্রকাশিত লেখা বাদ দেইনা। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে প্রতিটি গণতান্ত্রিক ইতিবাচক আন্দোলনে তাঁর ক্ষুরধার লিখনী আন্দোলনে শান দিয়েছে। সর্বশেষ বর্বরতা, ৫ জানুয়ারি ২০১৪ এর লজ্জ্বময় নির্বাচনের তিনি ঘোর বিরুধী ছিলেন।

তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, দর্শণ ও অর্থ শাস্ত্রে সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে দুটি দেশীয় সর্বোচ্চ বিদ্যাপিটে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি প্রায় শয়ের অধিক বই লিখেছেন তৎমধ্যে ২০/২২ টা আমার পড়ার সৌভাগ্য হয়েছে, বিশেষ করে তাঁর অন্যমত শ্রেষ্ট সৃষ্টি তিন খন্ডে প্রকাশিত “পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি নামে বৃহৎ গবেষনা পড়ার আমার সৌভাগ্য হয়েছে।

সব্যসাচী লেখক আহমদ ছফা বলেছিলেন আর কিছুর দরকার নেই, ওমর যদি জীবনে আর কিছু না-ও করতেন তবু ও এই গ্রন্থের জন্য তিনি বাঙালি সমাজে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

বাংলার লেখক সমাজ যখন শতধা বিভক্ত, বুদ্ধিজীবী সমাজ যখন দাসত্বের মানসিকথায় নেতা নেত্রীদের আজ্ঞাবহ ভৃত্যেরর মত পদলেহনে ব্যস্থ ওমর তখনো লিখে যাচ্ছেন চির উন্নত শিরে। সকল অসংঘতির বিরুদ্ধে, অনৈতিক শক্তির বিরুদ্ধে তিনি মূর্তিমান আতঙ্ক।

উরুগুয়ে, পেরাগুয়ে, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, বেনিজুয়েলা, কিউবা সহ পুরো ল্যাথিন আমেরিকায় বিপ্লবের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ সমাজতান্ত্রিক আদর্শের বরপুত্র চেগুয়েভারা, যার আদর্শিক জ্যোতি ল্যাথিন আমেরিকায় এখনো নিবুনিবু জ্বলতেছে।

আর বাংলাদেশে শোষনবাদ, সাম্রাজ্যবাদ বিনাশী আজীবন লড়াকো সংগ্রামী বদরুদ্দীন ওমর। তাঁর আজীবন লালিত স্বপ্ন ছিল শোষন মুক্ত শ্রেণীহীন, সুষম সমাজতান্ত্রীক সমাজ ব্যাবস্থা প্রতিষ্টা করা, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে কিছু স্বার্থান্বেষী নব্য বিভীষণ বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র প্রতিষ্টার নাম দিয়ে বহুদা বিভক্ত হয়ে বাংলাদেশে বৈসম্যহীন শ্রেণীবিবর্জিত সমাজ বিনির্মানের শ্মশান রচনা করেছে, সুষম বন্টনের মূলোৎপাটন করেছে চিরতরে। এই হীন ষড়যন্ত্রে তাদের স্বর্থোদ্বার হয়েছে বটে কিন্তু সুন্দর সমাজ ব্যাস্থার মৃত্যু ঘটেছে। প্রিয় লেখকের দীর্ঘায়ু কামনা করি।

About সালেক শিবলু

বিএ অনার্স, এমএ (প্রথম শ্রেণি) এমফিল গবেষক, বাংলা বিভাগ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর

View all posts by সালেক শিবলু

One Comment on “বদরুদ্দীন উমরের জন্মদিনে সোসাল মিডিয়াতে শিল্পজনের শুভেচ্ছা বার্তা 2021”

Comments are closed.